আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
এলিনার সাথে এর মাঝে কয়েকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। দু-য়েকবার পার্কে আর বাকি সময় বাসাতেই। ওর মায়ের সাথে গল্প হয়েছে- তিনি একদিন আমাকে ঐতিহ্যবাহী বোরিশ স্যুপ রান্না করে খাইয়েছেন।
ওর ছোট বোন চঞ্চলা চপলা নাদিয়ার সাথেও বেশ ঘনিষ্ঠ হয়েছি। নজর ওর দিকেও পড়ে মাঝে মাঝে- কিন্তু বাবনিক মনকে শাসন করি সব হারানোর ভয়ে!
নারীদের ঘনিষ্ঠ হবার জন্য – কিংবা খুব সহজে কাছে পাবার জন্য আমাদের আরেকটা ফর্মুলা আছে। সেটা জন্মদিন ফর্মুলা।
এবছর আমারই জন্মদিন বার তিনেক হয়ে গেছে- এবার চতুর্থ বার আয়োজনের পালা!
সুমনকে আমার মনের কথা বলতেই- সে খুশীতে ঝলমলিয়ে উঠে বলল, -জন্মদিনটা আমার করলে হয়না?
আমি বললাম,- আলবৎ হয় কিন্তু যার জন্য এ আয়োজন সে যদি না আসে?
-ও- তা ঠিক, তা হলে কর।
এখানকার সব বাঙালি ছোকরারাই জানে জন্মদিন মানে হল ফালতু একটা উৎসবের বাহানা। রাতভর মদ আর জাকোজকা খাওয়া মেয়েমানুষ লেপটে জড়িয়ে ধরে নাচ-গান ফুর্তি করা।
এলিনার ধারনা নেই কেউ মিথ্যে জন্মদিন পালন করতে পারে। তাদের কাছে জন্মদিন মানে ব্যাপক ব্যাপার! পরিচিত কারো জন্মদিনের পার্টি এরা মিস করেনা বিশেষ।
বেছে বেছে অল্প কয়েকজনকে দাওয়াত দিলাম। বেশী লোকজন থাকলে ঝামেলা- সবাই সবাইকে নিয়ে নাচতে চায়- আর একটু আধটু ছোঁক ছোঁক তো করে। মদ খেলে সব দোষ মাফ!
এলিনাকে জন্মদিনের কথা বলতেই বেশ উৎফুল্ল হল বলেই মনে হয়। তাছাড়া নাদিয়াকে দাওয়াত দেয়াতে সে বেশ খুশী হল। একা একা কোথাও যেতে মনে হয় না স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। যেহেতু বেশীরভাগ অপরিচিত ভিনদেশীদের আড্ডা যেখানে সেখানে সেখানে আসতে একটু ভয়-ডর লাগেই।
আমাদের আয়োজন বেশ জাঁকজমকপূর্ণ-ই ছিল। নিজেদের হাতে বানানো কিছুই নেই-রান্না করা মাংস ছাড়া।সব কিছুই কিনে এনে সাজিয়ে রাখা।
মদ আর খাবারের প্রাচুর্যতা দেখে রুশীয় অভ্যাগতদের চক্ষু চড়ক!
নাদিয়া-তো সব দেখে এসে অব্দি তিড়িং বিড়িং লাফাচ্ছে। খাবার আগেই গান ছেড়ে নাচ শুরু করে দিল! ওর এই বেহায়াপনা দেখে এলিনা বেশ লজ্জা পাচ্ছে। সে এসে অব্দি সোফার এককোণে চুপ মেরে বসে আছে।
বন্ধুদের সবাই প্রায় জোড়ায় জোড়ায় আসছে। সিঙ্গেলদের দাওয়াত করিনি। ওরা সবাই এলিনার দিকে আড়ে ঠারে তাকাচ্ছে। সুমন মারফত দু-দণ্ডেই খবর এ কান ও কান ছড়িয়ে পড়ল- এটা সৌম্যের নতুন শিকার।
তার সাথে ইচ্ছে করেই এক অনুষ্ঠানে মাতাল হয়ে অনেক্ষন নেচে ছিলাম। রেনেতা’র বিদায়ের পর মদটা পাকাপোক্ত ভাবে ধরেছিলাম। প্রথম পর্ব নাচের শেষে ওর বোন নাদিয়া আমাকে অনুরোধ করল তার সাথে নাচতে। সবাই তখন ঘুমে ঢুলু ঢুলু। আমি রাজী হতেই সে মেয়ে নাচতো নয় যেন শুরু করল ঢলাঢলি। দু-হাতে শক্ত করে আমার গলা জড়িয়ে ধরে আমার দেহে সাঁটঙ্গে সেটে গানের তালে তালে শরীর দুলাতে লাগল। পুরুষ আমি! উত্তেজিত হবোই। স্রোতে আমিও গা ভাসিয়ে দিলাম। হঠাৎ নাদিয়া আমার ঠোটে তার ঠোট চেপে ধরে চকাস করে গভীর একটা চুমু খেল। আমি ঠোটটা সরিয়ে নিতে নিতে আড় চোখ চেয়ে দেখি এলিনা আমাদের দিকে পুর্নদৃস্টি মেলে মিটিমিটি হাসছে। তবে চোখের কোনে ব্যথার আভাস। আমি সঙ্গে সঙ্গে নাদিয়াকে ছেড়ে দিয়ে তার হাঁটুর কাছে গিয়ে বসলাম।
তেমনি একটা বিটকেলে হাসি দিয়ে সে আমাকে ব্যাঙ্গ করে বলল কি ব্যাপার নাচ বন্ধ করলে কেন? নাচো আরো নাচো। আমি অপরাধীর মত মাথা নিচু করে বললাম ‘তোমাকে ছাড়া আর কারো সাথে নাচব না ।
অনেক্ষন রাগল তার মান ভাঙ্গাতে। অতিরিক্ত মদ্যপান আর নেচে গেয়ে ক্লান্ত হয়ে ততক্ষণে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
তখন ডেক সেটে বাজছে আমার খুব প্রিয় ‘ফিল কলিন্স’ এর সেই গানটা;
~You can tell from the lines on her face
You can see that she's been there
Probably been moved on from every place
'Cause she didn't fit in there
Oh, think twice, 'cause it's another day for you and me in paradise
Oh, think twice, it's just another day for you
You and me in paradise
বাকি রাত শুধু আমরা দুজনে নেচেছিলাম ‘ফিল কলিন্স’ এই গানের সুরে।
সে রাতে প্রথমে একটু দুরে দুরে থাকলেও গভীর রাতে দু’জনে অনেক ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম তবে রুশ দৃষ্টিতে সেটা শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করেনি। আমার ইচ্ছে ছিল এগোনোর কিন্তু সে এড়িয়ে গেছে । হাতটা কোমর ছাড়িয়ে একটু এদিক ওদিক গেলেই সে একহাত বাড়িয়ে সরিয়ে দিয়েছে। ভারী বুকের উষ্ণ মোলায়েম স্পর্শ পেয়ে গভীর আবেগে ঠোট দুটো তাকে চুম্বনের জন্য এগিয়ে যেতেই সে চকিতে মুখ সরিয়ে নিয়েছে। মাঝেমধ্যে গলায় কপোলে দুয়েকটা চুমু খেয়েছি। তবে বেশী এগুতে বা জোড় করতে সাহস পাইনি ‘যদি সে রাগ করে ফিরে যায় আর না আসে। তার সাথে প্রেম করা ছিল আমার মনের সাথে আমার একটা চ্যালেঞ্জ- এটাতে হারতে আমি রাজী নই।
তবে শরীর শরীরকে টানে। এখানে একচ্ছত্র দায় শুধু পুরুষের নয়।
দু’য়েকবার সে আমার বুকের উপর মাথা রেখে শরীরের পুরো ভর ছেড়ে দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে নেচেছে। তবে অল্প সময়ের জন্য। মনে হয় ক্লান্ত হয়ে।
রাশিয়া গিয়ে ভুলে গিয়েছিলাম কারো শরীর দেখতে সাধনা করতে হয়।
তবে এবারে আমাদের প্রেম পর্বটা শুরু না হয় হল। সে-ই বা মন্দ কি!
পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link
এলিনাকে নিয়ে প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:১৯